চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক,প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে নতুন নাম

মোঃ সিরাজুল মনির,
চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান
বেপরোয়া গাড়ি চলাচল এবং সড়ক পিচ্ছিল হওয়ার কারণে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে যানবাহন। নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক এখন যেন মৃত্যুর ফাঁদ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয় নতুন নতুন নাম। এই মহাসড়কটি দুই লাইনের হওয়ায় যানবাহন চলাচলে বিপর্যয় ঘটে প্রতিনিয়ত। ড্রাইভাররা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাই এবং পটিয়া থেকে চকরিয়া পর্যন্ত লবণ বালি বহনকারী ট্রাকগুলো চলাচলের কারণে সড়কে পিচ্ছিল অবস্থায় থাকে সবসময়। এতে কম গতির যানবাহন ও সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়।
কক্সবাজার এ ঘুরতে আসা পর্যটকরা বিভিন্ন সময় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পরিবারসহ নিহত হওয়ার খবর রয়েছে অনেক। এ মহাসড়কের কোথাও না কোথাও প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনার খবর হতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। কিছু কিছু জায়গায় সড়ক প্রশস্ত করলেও দুর্ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে থাকার কারণে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় যানবাহন গুলোর। প্রতিদিন কারো না কারো পরিবারে কান্নার আওয়াজ শুনতে হয় এই অঞ্চলের মানুষদের।
কক্সবাজার ভ্রমণ করতে আসা ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আহসানুল্লাহ জানায়, ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন চালু হওয়ার পর থেকে সাহস করে কক্সবাজার ঘুরতে আসি মহাসড়কের সড়ক দুর্ঘটনার খবর শুনে বাসে বা ব্যক্তিগত গাড়িতে কক্সবাজার আসা হয়নি। এ মহাসড়কের দুর্ঘটনার খবর প্রতিদিন মিডিয়ায় চেহারা দেখতে পাই এতে পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে কক্সবাজার ভ্রমণে উৎসাহ হারাই। ট্রেন চলাচলের কারণে কিছুটা নিরাপদ অবস্থায় কক্সবাজারে যাতায়াত করা যাচ্ছে। এ মহাসড়কে দুর্ঘটনার বৃদ্ধির একমাত্র কারণ হচ্ছে সড়কগুলো পিচ্ছিল হয়ে থাকে প্রায় সারাদিন যার কারণে যানবাহন চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হয় চালকদের একপর্যায়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।
সড়ক ও জনপথ দোহাজারী অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, এ মহাসড়ক দিয়ে বালি এবং লবনের ট্রাক চলাচলে কিছুটা সীমাবদ্ধ করে দেয়া হলেও তা অমান্য করে চালকরা। ট্রাক থেকে পানি নিচে না পারার ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বললেও সে অনুযায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণে সড়কে পানি পড়ে পিচ্ছিল হয়ে যাওয়ার জন্য দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি অনেক সংগঠন দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সরকার। এভাবে এই মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটতে থাকলে কক্সবাজারের সাথে সারা দেশের যোগাযোগ কমে আসবে এবং পর্যটন খাতে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। অনেকের মতামত লবণ ও বালির ট্রাকগুলো চলাচলের ক্ষেত্রে মহাসড়কের পাশ দিয়ে আলাদা করে সড়ক নির্মাণ করলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে। মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় অনেকগুলো বাক থাকার কারণে এবং বাক গুলোতে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ না করার ফলে ও দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে বেশি। আগামীতে সড়ক প্রশস্ত করনের কাজ শুরু হলে বাঁকগুলোকে সোজা রাস্তায় পরিণত করা হবে। এতে দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে মনে হয়।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান দুর্ঘটনা রোধ এবং কক্সবাজারে যানবাহন যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় এ মহাসড়কটি প্রশস্ত করণ প্রকল্প ইতিমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছে যা আগামী কিছুদিনের মধ্যে সড়ক প্রশস্ত করনের কাজ শুরু হতে পারে বলে কর্মকর্তারা বলেন।