| ৮ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনামঃ

নগরীর কোচিং সেন্টারগুলো নীতিমালার আওতায় আনতে হবে- চট্টগ্রাম সিটি মেয়র

নগরীর কোচিং সেন্টারগুলো নীতিমালার আওতায় আনতে হবে- চট্টগ্রাম সিটি মেয়র

মোঃ সিরাজুল মনির, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান,

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কোচিং সেন্টারগুলোর অনুমতিবিহীন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও সাইনবোর্ডের কারণে নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। যেহেতু কোচিং সেন্টারগুলো একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা খাত, তাই এটি অবশ্যই নৈতিকতা ও নীতিমালার আওতায় আসতে হবে। এজন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় টাইগারপাসস্থ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষার্থে নগর জুড়ে বেআইনি পোস্টার, ব্যানার, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন ধরণের ভিজ্যুয়াল দূষণ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এসব কথা বলেন।

মেয়র ডা. শাহাদাত বলেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে নিয়ম-কানুন মানতে হবে। বর্তমানে প্রায় ৪০০ কোচিং সেন্টার রয়েছে তার মধ্যে মাত্র ১২০টির ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত লাইসেন্সের আওতায় আনতে হবে। কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান যেহেতু তারা ছাত্রদের থেকে ফি আদায় করে। এজন্য প্রতিটি কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স করা আবশ্যক।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমৃদ্ধ চকবাজার জোনটিকে একটি ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি জোনে রূপান্তর করতে। তাই যত্রতত্র ব্যানার-পোস্টার বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে আমরা ডিজিটাল বোর্ড বা এলইডি স্ক্রিনে নিয়ম অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করব। এতে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে না, একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও নিয়ম মেনে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।

মেয়র বলেন, “সিটি কর্পোরেশন একা কিছু করতে পারবে না। নাগরিকদের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া নগর পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব নয়। আমরা নিজেদের রাজস্ব থেকে রাস্তা মেরামত, নালা-খাল পরিষ্কার ও জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ করছি। তাই সবাইকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। যারা এখনো ট্রেড লাইসেন্স করেননি, তারা দ্রুত লাইসেন্স গ্রহণ করবেন এবং যাদের লাইসেন্স নবায়ন হয়নি তারা নবায়ন করবেন।

সভায় চসিকের রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা রাজস্বের প্রসঙ্গে বলেন, চট্টগ্রামে প্রায় ৪০০ কোচিং সেন্টার রয়েছে। কিন্তু মাত্র ১২০টির ট্রেড লাইসেন্স আছে, বাকিগুলো লাইসেন্স ছাড়াই চলছে। কিছু প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স করার পর আর রিনিউ করছেনা। আবার অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়া ব্যানার-পোস্টার লাগাচ্ছেন এবং এগুলো অপসারণ করছেনা। এতে রাজস্ব ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি নগরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম শহরে কোচিং সেন্টারগুলো অন্তত ৮০ ভাগ বিজ্ঞাপন-লিফলেট প্রচারের ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন থেকে অনুমতি নিচ্ছেনা। নিয়ম মেনে আনুমানিক ২০ ভাগ বিজ্ঞাপন কর্পোরেশনের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়। ফলে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। শত শত প্রতিষ্ঠান এ ধরনের অনিয়ম করছে যা নিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা।

তারা আরও বলেন, অনুমতিহীন, অবৈধ কোচিং সেন্টারগুলো যত্রতত্র বিজ্ঞাপন, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করছে। একটি ব্যানার বা সাইনবোর্ডের জন্য মাত্র এক-দুই হাজার টাকার কর প্রদানই যথেষ্ট। অথচ অনেক প্রতিষ্ঠান তা পরিশোধ করে না। অথচ এই অর্থ দিয়েই সিটি কর্পোরেশন শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ রাখতে কাজ করে। শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নাগরিকদের অংশগ্রহণ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, চট্টগ্রাম কোচিং এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ সোহেল, নগরীর বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।

চট্টগ্রামের সবজির বাজারে উত্তাপ ,মাছ মুরগির দাম বেড়েছে

নগরীর কোচিং সেন্টারগুলো নীতিমালার আওতায় আনতে হবে- চট্টগ্রাম সিটি মেয়র

মোঃ সিরাজুল মনির ,

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান,

সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে চাহিদা বেশি থাকার কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দামে উত্তাপ ছড়িয়েছে। দাম বেড়েছে মাছ ও মুরগিতে।

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনে দেখা যায় কাঁচা শাকসবজিতে প্রায় ১০ টাকা করে বেড়েছে প্রতি কেজিতে। সিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি টমেটো একশ ৪০ টাকা করলা ১০০ টাকা কাকরোল ১০০/১২০ টাকা বেগুন ৮০ টাকা ঝিঙ্গা ৭০/৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা, চিচিঙ্গা৬০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, অন্যান্য সবজি অবস্থা বুঝে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। নগরীতে এক বাজারের সাথে অন্য বাজারের মূল্যের কোন মিল নাই যেখানে যেমন ইচ্ছা পারতেছে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে একটা ক্রেতাদের কাছ থেকে। কোন বাজারে মনিটরিং ছেলের ব্যবস্থা না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা যেমন ইচ্ছা তেমন মূল্য নির্ধারণ করে। বাজারগুলোতে প্রায় সময় ক্রেতা বিক্রেতা ঝগড়া লেগেই থাকে মূল্য নিয়ে। বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অনৈতিকভাবে মূল্যবৃত্তি করে যাচ্ছে বলে ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হওয়ায় এই সুযোগকে আরও বেশি করে কাজে লাগিয়েছে ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত চাহিদা থাকার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি থাকলেও অবৈধ মুনাফা লোভীরা যেমন ইচ্ছা তেমন দাম হাঁকাচ্ছে।

অপরদিকে দিনের ব্যবধানে মাছ মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০/২০ টাকা। একদিন আগেও বয়লার মুরগির দাম কেজি ১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল আজকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৫ টাকায়। মাছের বাজারে সাইজ এবং রকম বুঝে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে মাছ ব্যবসায়ীরা।

সাধারণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে বলেন কোন বাজারে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা যেমন ইচ্ছা তেমন দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। কোন পণ্যের সংকট না থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের সময়ে এসেও সিন্ডিকেট প্রথা চালু থাকার কারণে সাধারণ ক্রেতারা এদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কেউ কোন জায়গায় প্রতিবাদ করে এর প্রতিকার পাচ্ছে না। এ বিষয়গুলো যেন দেখার কেউ নেই।

শ্রীপুরে নবগঠিত তেলিহাটি বিএনপি নেতা শাহজাহানকে ফুলেল শুভেচ্ছা

নগরীর কোচিং সেন্টারগুলো নীতিমালার আওতায় আনতে হবে- চট্টগ্রাম সিটি মেয়র

স্টাফ রিপোর্টার: এম দেলোয়ার হোসেন মৃধা

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় নবগঠিত তেলিহাটি ইউনিয়ন বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক জনাব শাহজাহান মোড়লকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এ উপলক্ষে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় তাকে বরণ করে নেন।

রবিবার (তারিখ) বিকেলে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় মজনু ফকির সুপার মার্কেটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কার্যালয়ে এ আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানে পৌর শ্রমিক দল নেতা মজনু ফকিরের নেতৃত্বে শ্রীপুর বিএনপি, তেলিহাটি ইউনিয়ন বিএনপি, পৌর শ্রমিক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নবনিযুক্ত যুগ্ম আহবায়ক শাহজাহান মোড়লকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সরেজমিন হালদা নদী পর্ব (১)

দেশের বৃহৎ রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র হালদা

নগরীর কোচিং সেন্টারগুলো নীতিমালার আওতায় আনতে হবে- চট্টগ্রাম সিটি মেয়র

মোঃ সিরাজুল মনির,

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি চট্টগ্রাম। পাহাড়, সাগর ও নদীবেষ্টিত এ চট্টগ্রাম আরও সমৃদ্ধ হয়েছে হালদা নদীর অনন্য বৈশিষ্ট্যের গুণে। হালদা নদী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখান থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। পৃথিবীর আর কোন জোয়ার-ভাটার নদী থেকে সরাসরি ডিম আহরণের নজির আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ কারণে হালদা নদী বাংলাদেশের জন্য এক বৈশ্বিক উত্তরাধিকারও বটে। অথচ দেশের নদী সম্পর্কিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল কিংবা ইতিহাসে এ নদীর নাম অনেকটা অনুচ্চারিত।

অপার জীববৈচিত্র্যময় ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ নদী জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখে আসছে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) পোনার জন্য এ নদীর আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এটি যোগাযোগ, কৃষি ও পানি সম্পদেরও একটি বড় উৎস। প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি গ্যালন পানি উত্তোলন করে চট্টগ্রাম ওয়াসা শহরের সূপেয় পানি সরবরাহ করে এ নদী থেকে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ যে কয়েকটি প্রাকৃতিক সম্পদ বাংলাদেশে রয়েছে তার মধ্যে হালদা অন্যতম। আগে বাংলাদেশ ছাড়াও হালদার পোনা ভারত ও মিয়ানমারে রপ্তানী হতো। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, বাঁক কাটা, মা-মাছ শিকার, নদী দূষণ, সরকারের উদসীনতাসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে প্রাকৃতিক এ মৎস্যভান্ডার এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। এর ফলে প্রতি বছর মা-মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে।

হালদা নদীর উৎপত্তি:

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার পাহাড়ী ক্রীক থেকে দেশের মৎস্য খনিখ্যাত হালদা নদীর উৎপত্তি। এই নদী চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রায় ৯৮ কি.মি. (উৎস থেকে কালুরঘাট সরাসরি দূরত্ব প্রায় ৫৭ কি. মি.) পথ অতিক্রম করে চট্টগ্রাম শহরের কালুরঘাট নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। ফটিকছড়ির উপর দিয়ে দেশের গর্ব এ নদীর অধিকাংশ পথ (৪০ কি.মি.) অতিক্রম করেছে। এ নদীর পানির প্রধান উৎস মূলত: ফটিকছড়ি উপজেলার অসংখ্য পাহাড়ী ছড়া। ছড়াগুলো নদীর মূল স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়ে হালদাকে বৈশিষ্ট্যময় নদী হিসেবে এখনো সমৃদ্ধ করে রেখেছে।

হালদা নদী গুরুত্বপূর্ণ কেন?

হালদা নদী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল এবং কালিগনি) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এটিই দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র যেখান থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশের রুই জাতীয় মাছের একমাত্র বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক জিন ব্যাংক। এই প্রাকৃতিক জিন পুল বাঁচিয়ে রাখার জন্য হালদা নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রগুলিতে ইনব্রিডিং-এর কারণে মাছের বৃদ্ধি মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং বামনত্ব, বিকলাংঙ্গতাসহ বিভিন্ন ধরনের জিনগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দ্রুত বর্ধনশীল বড় আকারের রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিগনি মাছ এক সময় রূপকথার গল্পের মত মনে হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য হালদা নদীর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের বিকল্প নেই। এজন্য বর্তমানে মৎস্যচাষী ও হ্যাচারি মালিকেরা রেণু পোনার জন্য আবার হালদার পোনার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। হালদা একমাত্র নদী যেখান থেকে আহরিত ডিম স্মরণাতীত কাল থেকে স্থানীয় জ্ঞানের মাধ্যমে প্রাচীন পদ্ধতিতে নদীর পাড়ে খননকৃত মাটির গর্তে (কুয়ায়) ফোটানো হয় এবং চারদিন লালন করে রেণু পোনা (ঋরংয ঋৎু) তৈরি করা হয়। এ নদীর রুই জাতীয় মাছের বৃদ্ধির হার অন্যান্য উৎসের মাছের তুলনায় অনেক বেশি (যেমন কাতলা বৎসরে ২.০-২.৫ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়)। এতে মৎস্যচাষী এবং হ্যাচারি মালিকেরা হালদা নদীর রুই জাতীয় মাছের চাষ কিংবা প্রজনন ঘটিয়ে বেশি লাভবান হতে পারে। ব্রিটিশ আমলে সারা দেশের ২/৩ অংশ পুকুরে মৎস্য চাষ তথা একোয়াকালচার হালদার পোনা দিয়েই করা হতো। এমনকি ভারত এবং মিয়ানমারেও হালদার পোনা চাষের জন্য নিয়ে যেত। বর্তমানেও পরিকল্পিতভাবে হালদা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব। বর্তমান বাংলাদেশের প্রায় ৮ শতাধিক কার্প হ্যাচারি (রেণুর চাহিদা ২ লক্ষ কেজি প্রায়) তথা বাংলাদেশের একোয়াকালচার এবং বায়োডাইভার্সিটি বাচিঁয়ে রাখার জন্য হালদার প্রাকৃতিক উৎসের গলদা চিংড়ি ও মেজর কার্পের পোনার গুরুত্ব অপরিসীম।