| ৮ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনামঃ
চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধানঃ মোঃ সিরাজুল মনির
প্রকাশিত: ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৯:১৫ পিএম

চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য নগরবাসীর দুর্ভোগ

চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য নগরবাসীর দুর্ভোগ

 

মোঃ সিরাজুল মনির,

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান

চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ক্যাচমেন্ট–১ এর সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাইপলাইনের কাজের জন্য সড়কে খোঁড়াখুঁড়িতে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে। ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বেহাল দশা। প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও পথচারীরা। তবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) হস্তান্তরের সাথে সাথে মেরামত করা হলে নগরবাসীর দুর্ভোগ অনেক কমে আসবে বলে জানান ওয়াসার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।

সরেজমিনে নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তিনপোলের মাথা, পাঠানটুলী রোড, আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পাইপলাইনের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় সড়কে পাইপলাইন স্থাপনের কাজ চলছে। তবে ধীরগতির কাজ ও দ্রুত মেরামত না করার কারণে এলাকাবাসী কষ্টে আছেন।

স্যুয়ারেজ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ক্যাচমেন্ট–১–এ পাইপলাইনের কাজের জন্য নগরীতে পর্যায়ক্রমে ২০০ কিলোমিটার সড়ক কাটা হবে। হালিশহর ক্যাচমেন্ট–১ এর কাজের জন্য এখন পর্যন্ত আমরা ৯৩ কিলোমিটার সড়ক কেটেছি। এর মধ্যে ৪৮ কিলোমিটার সড়কে কাজ শেষে সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর করে দিয়েছি। সড়ক কর্তনের জন্য এ পর্যন্ত চসিককে ৮২ কোটি টাকা দিয়েছি। যখন যেটা হস্তান্তর করছি সেটা চসিক সাথে সাথে সংস্কার করলে নগরবাসীর দুর্ভোগ অনেক কমে আসবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, এই ২০০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য সিটি কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ বাবদ আমাদেরকে ১৩০ কোটি টাকা দিতে হবে। ২০২১–২২ সালের হিসাবে অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের জন্য ১৩০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখন সেটা অনেক বেড়ে গেছে। চসিকের নতুন হিসাব অনুযায়ী এখন ২০০ কোটি টাকার মতো দিতে হবে। সড়ক কাটার ব্যাপারে এখন চসিকের সাথে নিয়মিত সমন্বয় সভা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো কাটার কারণে এসব এলাকায় যানবাহন ও পথচারীরা চলাচলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। যেখানে সড়ক খুঁড়ে স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পাইপলাইনের কাজ চলছে সেখানে সকাল থেকে থেমে থেমে দীর্ঘ যানজটের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার পথচারী।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ক্যাচমেন্ট–১ এর কাজ ২০২৬ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু মাঝখানে কাজ কিছুটা ধীরগতিতে হওয়ায় ২০২৭ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের অধীনে ২০০ কিলোমিটার পয়ঃপাইপলাইনের মধ্যে ১১০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানো হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ চলছে। হালিশহরে ১৬৩ একর জমিতে দুটি সর্বাধুনিক ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের সিভিল কন্সট্রাকশনের কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

ওয়াসার মাস্টার প্ল্যানের আওতায় চট্টগ্রাম শহরকে ৬টি ক্যাচমেন্টে ভাগ করা হয়। ক্যাচমেন্টগুলো হলো হালিশহর, কালুরঘাট, ফতেয়াবাদ, পূর্ব বাকলিয়া, উত্তর কাট্টলী ও পতেঙ্গা। এর মধ্যে হালিশহর ক্যাচমেন্টের আওতায় আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকা। স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ছয়টি জোনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ক্যাচমেন্ট–১ এর কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে। বাংলাদেশ সরকার ও ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে ৫ হাজার ২১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর নগরীর ২০ লাখ মানুষ স্যুয়ারেজের আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। এ প্রকল্পের অধীনে নগরীর ২১টি ওয়ার্ডের ২৮ হাজার বাড়িঘরে স্যুয়ারেজের লাইনের কাজ চলছে।

নগরবাসীর দাবি নগরীতে যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কাজ চলমান রেখেছে তাদের মধ্যে কোন প্রকারের সমন্বয় না থাকার কারণে যথাসময়ে কোন কাজ সম্পন্ন করে না বলে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সকল সেবা সংস্থা সমন্বয় করে কাজ করলে ভোগান্তি কমে আসবে। সেবা সংস্থাগুলো ইচ্ছামত কাজ না করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে উন্নয়ন কাজ করলে যথাসময়ে কাজ শেষ হবে এবং ভোগান্তি কমবে।

চট্টগ্রামের সবজির বাজারে উত্তাপ ,মাছ মুরগির দাম বেড়েছে

চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য নগরবাসীর দুর্ভোগ

মোঃ সিরাজুল মনির ,

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান,

সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে চাহিদা বেশি থাকার কারণে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির দামে উত্তাপ ছড়িয়েছে। দাম বেড়েছে মাছ ও মুরগিতে।

চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনে দেখা যায় কাঁচা শাকসবজিতে প্রায় ১০ টাকা করে বেড়েছে প্রতি কেজিতে। সিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি টমেটো একশ ৪০ টাকা করলা ১০০ টাকা কাকরোল ১০০/১২০ টাকা বেগুন ৮০ টাকা ঝিঙ্গা ৭০/৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, লাউ প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা, চিচিঙ্গা৬০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, অন্যান্য সবজি অবস্থা বুঝে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। নগরীতে এক বাজারের সাথে অন্য বাজারের মূল্যের কোন মিল নাই যেখানে যেমন ইচ্ছা পারতেছে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে একটা ক্রেতাদের কাছ থেকে। কোন বাজারে মনিটরিং ছেলের ব্যবস্থা না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা যেমন ইচ্ছা তেমন মূল্য নির্ধারণ করে। বাজারগুলোতে প্রায় সময় ক্রেতা বিক্রেতা ঝগড়া লেগেই থাকে মূল্য নিয়ে। বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অনৈতিকভাবে মূল্যবৃত্তি করে যাচ্ছে বলে ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ। সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হওয়ায় এই সুযোগকে আরও বেশি করে কাজে লাগিয়েছে ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত চাহিদা থাকার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি থাকলেও অবৈধ মুনাফা লোভীরা যেমন ইচ্ছা তেমন দাম হাঁকাচ্ছে।

অপরদিকে দিনের ব্যবধানে মাছ মুরগির দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ১০/২০ টাকা। একদিন আগেও বয়লার মুরগির দাম কেজি ১৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল আজকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৫ টাকায়। মাছের বাজারে সাইজ এবং রকম বুঝে অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে মাছ ব্যবসায়ীরা।

সাধারণ হতাশাগ্রস্ত হয়ে বলেন কোন বাজারে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে ব্যবসায়ীরা যেমন ইচ্ছা তেমন দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। কোন পণ্যের সংকট না থাকলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের সময়ে এসেও সিন্ডিকেট প্রথা চালু থাকার কারণে সাধারণ ক্রেতারা এদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। কেউ কোন জায়গায় প্রতিবাদ করে এর প্রতিকার পাচ্ছে না। এ বিষয়গুলো যেন দেখার কেউ নেই।

শ্রীপুরে নবগঠিত তেলিহাটি বিএনপি নেতা শাহজাহানকে ফুলেল শুভেচ্ছা

চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য নগরবাসীর দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার: এম দেলোয়ার হোসেন মৃধা

গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলায় নবগঠিত তেলিহাটি ইউনিয়ন বিএনপির ১নং যুগ্ম আহবায়ক জনাব শাহজাহান মোড়লকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এ উপলক্ষে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ফুলেল শুভেচ্ছায় তাকে বরণ করে নেন।

রবিবার (তারিখ) বিকেলে শ্রীপুরের মাওনা চৌরাস্তায় মজনু ফকির সুপার মার্কেটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কার্যালয়ে এ আয়োজন হয়। অনুষ্ঠানে পৌর শ্রমিক দল নেতা মজনু ফকিরের নেতৃত্বে শ্রীপুর বিএনপি, তেলিহাটি ইউনিয়ন বিএনপি, পৌর শ্রমিক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

নবনিযুক্ত যুগ্ম আহবায়ক শাহজাহান মোড়লকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে উপস্থিত নেতাকর্মীরা সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে একযোগে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

সরেজমিন হালদা নদী পর্ব (১)

দেশের বৃহৎ রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র হালদা

চট্টগ্রাম ওয়াসার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের জন্য নগরবাসীর দুর্ভোগ

মোঃ সিরাজুল মনির,

চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি চট্টগ্রাম। পাহাড়, সাগর ও নদীবেষ্টিত এ চট্টগ্রাম আরও সমৃদ্ধ হয়েছে হালদা নদীর অনন্য বৈশিষ্ট্যের গুণে। হালদা নদী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এটি পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখান থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। পৃথিবীর আর কোন জোয়ার-ভাটার নদী থেকে সরাসরি ডিম আহরণের নজির আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এ কারণে হালদা নদী বাংলাদেশের জন্য এক বৈশ্বিক উত্তরাধিকারও বটে। অথচ দেশের নদী সম্পর্কিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল কিংবা ইতিহাসে এ নদীর নাম অনেকটা অনুচ্চারিত।

অপার জীববৈচিত্র্যময় ও মৎস্য সম্পদে ভরপুর এ নদী জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রেখে আসছে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) পোনার জন্য এ নদীর আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকলেও এটি যোগাযোগ, কৃষি ও পানি সম্পদেরও একটি বড় উৎস। প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি গ্যালন পানি উত্তোলন করে চট্টগ্রাম ওয়াসা শহরের সূপেয় পানি সরবরাহ করে এ নদী থেকে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ যে কয়েকটি প্রাকৃতিক সম্পদ বাংলাদেশে রয়েছে তার মধ্যে হালদা অন্যতম। আগে বাংলাদেশ ছাড়াও হালদার পোনা ভারত ও মিয়ানমারে রপ্তানী হতো। সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব, বাঁক কাটা, মা-মাছ শিকার, নদী দূষণ, সরকারের উদসীনতাসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণে প্রাকৃতিক এ মৎস্যভান্ডার এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। এর ফলে প্রতি বছর মা-মাছের ডিম ছাড়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে।

হালদা নদীর উৎপত্তি:

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার রামগড় উপজেলার পাহাড়ী ক্রীক থেকে দেশের মৎস্য খনিখ্যাত হালদা নদীর উৎপত্তি। এই নদী চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রায় ৯৮ কি.মি. (উৎস থেকে কালুরঘাট সরাসরি দূরত্ব প্রায় ৫৭ কি. মি.) পথ অতিক্রম করে চট্টগ্রাম শহরের কালুরঘাট নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। ফটিকছড়ির উপর দিয়ে দেশের গর্ব এ নদীর অধিকাংশ পথ (৪০ কি.মি.) অতিক্রম করেছে। এ নদীর পানির প্রধান উৎস মূলত: ফটিকছড়ি উপজেলার অসংখ্য পাহাড়ী ছড়া। ছড়াগুলো নদীর মূল স্রোতের সঙ্গে মিলিত হয়ে হালদাকে বৈশিষ্ট্যময় নদী হিসেবে এখনো সমৃদ্ধ করে রেখেছে।

হালদা নদী গুরুত্বপূর্ণ কেন?

হালদা নদী বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রুই জাতীয় মাছের (রুই, কাতলা, মৃগেল এবং কালিগনি) প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র। এটিই দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র যেখান থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। বাংলাদেশের রুই জাতীয় মাছের একমাত্র বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক জিন ব্যাংক। এই প্রাকৃতিক জিন পুল বাঁচিয়ে রাখার জন্য হালদা নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রগুলিতে ইনব্রিডিং-এর কারণে মাছের বৃদ্ধি মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং বামনত্ব, বিকলাংঙ্গতাসহ বিভিন্ন ধরনের জিনগত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দ্রুত বর্ধনশীল বড় আকারের রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিগনি মাছ এক সময় রূপকথার গল্পের মত মনে হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য হালদা নদীর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণের বিকল্প নেই। এজন্য বর্তমানে মৎস্যচাষী ও হ্যাচারি মালিকেরা রেণু পোনার জন্য আবার হালদার পোনার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। হালদা একমাত্র নদী যেখান থেকে আহরিত ডিম স্মরণাতীত কাল থেকে স্থানীয় জ্ঞানের মাধ্যমে প্রাচীন পদ্ধতিতে নদীর পাড়ে খননকৃত মাটির গর্তে (কুয়ায়) ফোটানো হয় এবং চারদিন লালন করে রেণু পোনা (ঋরংয ঋৎু) তৈরি করা হয়। এ নদীর রুই জাতীয় মাছের বৃদ্ধির হার অন্যান্য উৎসের মাছের তুলনায় অনেক বেশি (যেমন কাতলা বৎসরে ২.০-২.৫ কেজি পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়)। এতে মৎস্যচাষী এবং হ্যাচারি মালিকেরা হালদা নদীর রুই জাতীয় মাছের চাষ কিংবা প্রজনন ঘটিয়ে বেশি লাভবান হতে পারে। ব্রিটিশ আমলে সারা দেশের ২/৩ অংশ পুকুরে মৎস্য চাষ তথা একোয়াকালচার হালদার পোনা দিয়েই করা হতো। এমনকি ভারত এবং মিয়ানমারেও হালদার পোনা চাষের জন্য নিয়ে যেত। বর্তমানেও পরিকল্পিতভাবে হালদা নদীর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব। বর্তমান বাংলাদেশের প্রায় ৮ শতাধিক কার্প হ্যাচারি (রেণুর চাহিদা ২ লক্ষ কেজি প্রায়) তথা বাংলাদেশের একোয়াকালচার এবং বায়োডাইভার্সিটি বাচিঁয়ে রাখার জন্য হালদার প্রাকৃতিক উৎসের গলদা চিংড়ি ও মেজর কার্পের পোনার গুরুত্ব অপরিসীম।